Popunder

Social Bar

BD দুই ভাগ হয়ে যাচ্ছে ইন্ডিয়ান প্লেট, ভয়াবহ কম্পনের শঙ্কা? | Indian plate | Earthquake | Desh TV

0 Edge View Era


 

বাংলাদেশ কি সত্যিই দুই ভাগ হয়ে যাচ্ছে? ভূতাত্ত্বিক বাস্তবতা ও ভূমিকম্পের ঝুঁকি

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে এমন দাবি—বাংলাদেশের ভৌগোলিক ভিত্তি নাকি দুই ভাগে ভেঙে যাচ্ছে, আর এর ফলে ভয়াবহ ভূমিকম্পের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা কতটা? এই প্রশ্ন এখন অনেকের মনে।

বাংলাদেশের নিচে কী ঘটছে?

বিশ্বের ভূত্বক কয়েকটি বড় টেকটোনিক প্লেট ও অসংখ্য মাইক্রো-প্লেটের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। বাংলাদেশের ভূগঠন মূলত ইন্ডিয়ান প্লেট, বার্মা প্লেটইউরেশিয়ান প্লেটের সংযোগস্থলে। প্লেটগুলোর এই মিলনস্থল ভূমিকম্প প্রবণ হওয়াই স্বাভাবিক।

বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল, বিশেষ করে সিলেট–চট্টগ্রাম অঞ্চল, টেকটোনিক চাপের কারণে বেশি সক্রিয়। এর কিছু প্রাকৃতিক আন্দোলনকে ভুলভাবে “দেশ দুই ভাগ হয়ে যাচ্ছে” বলে প্রচার করা হলেও, বাস্তবে এটি প্লেটের স্বাভাবিক সরে যাওয়ার অংশ, যা পৃথিবীর ভূ-প্রকৃতিরই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।

‘দুই ভাগ হয়ে যাওয়া’—মিথ না বাস্তব?

বিশেষজ্ঞদের মতে:

  • বাংলাদেশকে টেনে ছিন্ন করে ফেলার মতো তাৎক্ষণিক বা দ্রুত কোন̧ প্লেট-বিভাজন এখনো পর্যবেক্ষণ করা হয়নি

  • যে ফাটল বা ফল্ট লাইনগুলো আছে, সেগুলো হাজার হাজার বছর ধরে সক্রিয় এবং ভবিষ্যতেও নড়াচড়া করবে—এটাই স্বাভাবিক।

  • ভূগোলবিদরা বলেন, ভূত্বকের প্লেট সরে যায় বছরে কয়েক মিলিমিটার হারে। তাই “হঠাৎ ভেঙে যাওয়া” বৈজ্ঞানিকভাবে অসম্ভব।

অর্থাৎ, “বাংলাদেশ দুই ভাগ হয়ে যাচ্ছে”—এটি অতিরঞ্জিত ব্যাখ্যা, যদিও টেকটোনিক চাপ সত্যিই আছে।

তাহলে কি বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকি রয়েছে?

এটি সত্য যে বাংলাদেশ একটি উচ্চ ভূমিকম্প ঝুঁকির অঞ্চলে। বিশেষ করে:

  • দাউকি ফল্ট (সিলেট সীমান্ত)

  • চট্টগ্রাম–কক্সবাজার টেকটোনিক জোন

  • মেঘনা–হতীয়া অঞ্চলের ফল্ট লাইন

এসব এলাকায় দীর্ঘদিন বড় ভূমিকম্প হয়নি, যা ভবিষ্যতে শক্তিশালী কম্পনের সম্ভাবনা বাড়াতে পারে। তবে কখন বা কত বড় হবে—এই পূর্বাভাস বিজ্ঞান এখনো নির্ভরযোগ্যভাবে দিতে পারে না।

জনগণের উদ্বেগ কেন বাড়ছে?

  • সামাজিক মাধ্যমে গুজব বা অসম্পূর্ণ তথ্য দ্রুত ছড়ায়।

  • ছোট ভূমিকম্পও মানুষকে ভীত করে যখন “ভেঙে যাচ্ছে” ধরনের শিরোনাম সামনে আসে।

  • ভূতাত্ত্বিক বিষয় সম্পর্কে সাধারণ মানুষের জ্ঞান সীমিত হওয়ায় আতঙ্ক সহজেই তৈরি হয়।

কীভাবে প্রস্তুত থাকা উচিত?

যদিও বিভক্ত হওয়ার ভয় বর্তমানে অমূলক, তবুও ভূমিকম্প–প্রবণ দেশে সচেতনতা জরুরি:

  • ভবনের ভূমিকম্প সহনীয় নকশা নিশ্চিত করা

  • স্কুল, অফিস ও ঘরে ড্রপ–কভার–হোল্ড অভ্যাস

  • জরুরি কিট প্রস্তুত রাখা

  • সরকারি নির্মাণকাজে কঠোর বিল্ডিং কোড অনুসরণ

  • ভৌত গবেষণা ও ভূকম্প পর্যবেক্ষণ উন্নত করা

শেষ কথা

বাংলাদেশ কোনোভাবেই “দুই ভাগ হয়ে যাচ্ছে” এমন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। তবে দেশটি যে একটি সক্রিয় প্লেট-বাউন্ডারির ওপর অবস্থিত এবং বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকি রয়েছে—তা সত্য। সঠিক তথ্য, গবেষণা ও প্রস্তুতি থাকলে এই ঝুঁকি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

About Us

Aflex Template is Designed Theme for Giving Enhanced look Various Features are available Which is designed in User friendly to handle by Piki Developers. Simple and elegant themes for making it more comfortable